

গাজীপুরে আ.লীগ কর্মীদের ‘কুত্তা’ বললেন যুব মহিলালীগ নেত্রী!
পোস্ট করেছেন: বার্তা বিভাগ ৪ | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২০, ২০২০ , ১:০৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অপরাধ,ঢাকা বিভাগ,প্রচ্ছদ,বিশেষ প্রতিবেদন,রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের কর্মীদের ‘কুত্তা’ বলে অশালীন মন্তব্য করেছেন গাজীপুরের জয়দেবপুরের কথিত যুব মহিলা লীগ নেত্রী। তার নাম নূরী মোহাম্মদীয়া ইতি। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন।
জানা গেছে, ইতি নিজের ফেসবুক আইডিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে জাড়িয়ে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন। ৯ এপ্রিল রাতে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গাজীপুরের মেয়রকে বলছি, আপনার কুত্তাবাহিনী দমন করুন, নতুবা ইতিহাস রচনা করবো।’
অন্য একটি পোস্টে স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে শেষে তিনি লেখেন, ‘এরা হলো একেকটি কুকুরের নাম।’ এদের মধ্যে আলিম ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক। রানা সাবেক ছাত্রনেতা, সেলিম শ্রমিক নেতা, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে ছাত্র রাজনীতি করেছেন। আর সেলিম ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের মহানগরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ফেসবুকে একের পর এক অশালীন ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট করায় বিষয়টি মেয়রের নজরে আনেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মেয়র বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ইতিকে কল করে খুব বিনয়ের সঙ্গে বিষয়টি জানতে চান। তিনি প্রথমে পুরো বিষয়টির অস্বীকার করেন। পরে একপর্যায়ে ইতি মেয়রকে বলেন, ‘আপনার কর্মীরা কুত্তার মতো আচরণ শুরু করেছে।’
মেয়র এ সময় বলেন, ‘একজন ভদ্র ঘরের সন্তান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক, যারা আওয়ামী লীগ করে, সেসব লোক কি বলতে পারে মেয়রের সাথে কুত্তারা চলে।’ প্রত্যুত্তরে ওই নারী উদ্ধতভাবে বলেন, ‘আমি লিখেছি, আপানার আশেপাশে যারা ঘুরে তারা বঙ্গবন্ধুর কর্মী। আমি আবারও বলবো আপনার আশেপাশে যারা ঘুরে তারা কুত্তা।’
তখন মেয়র ওই নারীকে বোঝানোর চেষ্টা করে বলেন যে, তার কর্মী মানে আওয়ামী লীগের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে এভাবে বাজে মন্তব্য করা উচিত নয়।
একপর্যায়ে মেয়রের সঙ্গেও উত্তেজিত আচরণ করতে থাকেন ওই নারী। এরপর ওই কথোপকথনের অংশবিশেষ নিয়ে একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া চলছে গোটা গাজীপুরজুড়ে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে ছুটে বেড়াচ্ছেন মেয়র জাহাঙ্গীর। চিকিৎসকদের সুরক্ষায়ও তিনি অবদান রেখে চলেছেন। জাতির এই দুঃসময়ে মেয়রের ভূয়ষী প্রশংসা হচ্ছে চারদিকে। এমন একটি সময়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কেউ ওই নারীকে দিয়ে কুৎসা রটানো শুরু করেছে।
তারা আরও বলছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এমন কুৎসা রটানো বিস্ময়কর। তারা ওই নারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ ঘটনায় তাকে যারা ইন্ধন জোগাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
এদিকে, কথিত এই যুব মহিলা লীগ নেত্রীর সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, নির্দিষ্ট কোন পদপদরি না থাকলেও নিজেকে যুব মহিলা লীগের নেত্রী পরিচয় দেন তিনি। তথাকথিত রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে তিনি ব্ল্যাক মেইলিং করে থাকেন। তার স্বামী পেশায় জমির দালাল। ২০১৮ সালের কাউন্সিলের পূর্বে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী যুব মহিলা লীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
গত ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ তে অনুষ্ঠিত গাজীপুর মহানগর যুব মহিলা লীগের পুবাইল এলাকায় পদ পেতে তিনি ভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তখন থেকে মেয়র জাহাঙ্গীর এর উপর চটেছেন। বর্তমানে তার কোন পদ পরিচয় না থাকায় সম্প্রতি মেয়র বিরোধী পক্ষের সাথে একাত্ম হয়ে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে মেয়রের বিরুদ্ধে ফেসবুকে এ ধরণের উস্কানীমূলক ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত কর্মকান্ড করছেন।
Comments
